আলো জ্বালিয়ে ঘুমালে কী ক্ষতি হতে পারে ?

আলো জ্বালিয়ে ঘুমালে কী ক্ষতি হতে পারে 1

বর্তমান যুগে শুধু শিশু নয়, বড়রাও মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছেন। চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, বয়স যাই হোক না কেন, রাতের বেলায় অতিরিক্ত স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা ঘুমের মান নষ্ট করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ও ঘুমানোর আগে আলোর সংস্পর্শে থাকা শরীরের স্বাভাবিক ঘড়ি বা সার্কাডিয়ান রিদম নষ্ট করে দেয়, যার প্রভাব পড়ে হৃদযন্ত্রে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় কী পাওয়া গেছে ?

রাতে দীর্ঘ সময় ধরে আলোতে তাকিয়ে থাকলে শরীরের প্রাকৃতিক ঘুম-জাগরণের চক্র বিঘ্নিত হয়। মস্তিষ্ক আলোকে দিনের সংকেত হিসেবে ধরে নেয়, ফলে হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ পড়ে এবং ঘুম আসতে দেরি হয়। গবেষকরা বলছেন, ভালো ঘুমের জন্য রাতে শোবার ঘর সম্পূর্ণ অন্ধকার রাখা জরুরি। বাইরে থেকে আলো ঢোকা রোধে পুরু পর্দা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা রাতে বেশি আলোতে থাকেন তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেশি। তাদের মধ্যে হৃদযন্ত্র অকেজো হওয়ার ঝুঁকি ৪৫-৫৬ শতাংশ এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের ঝুঁকি ২৮-৩২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। গবেষকরা আলোর উৎস নির্দিষ্ট না করলেও আলোর তীব্রতাকেই প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার্স ইউনিভার্সিটির গবেষক ড্যানিয়েল উইন্ডরেড বলেছেন, এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় গবেষণা যা প্রমাণ করে যে রাতের আলোতে থাকা হৃদরোগের জন্য একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ কারণ হতে পারে।

এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে JAMA Network Open জার্নালে। এতে যুক্তরাজ্যের প্রায় ৮৯,০০০ রোগীর ওপর ১০ বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ঘুমের আগে আলোর সংস্পর্শের মাত্রা মাপতে বিশেষ স্মার্ট ট্র্যাকার ব্যবহার করা হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি হৃদস্বাস্থ্যের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

ভালো ঘুম ও হৃদস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ঘুমানোর আগে মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভি থেকে দূরে থাকুন। শোবার ঘরে অপ্রয়োজনীয় আলো বন্ধ রাখুন এবং সম্ভব হলে পর্দা টেনে অন্ধকার পরিবেশ তৈরি করুন। আলো বন্ধে শুধু ঘুম ভালো হয় না, হৃদয়ও থাকে সুস্থ।

Scroll to Top