উচ্চ কোলেস্টেরল হৃদরোগ ও স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ। তবে সুখবর হলো এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং অনেক সময় সম্পূর্ণরূপে উল্টে দেওয়া সম্ভব।
Mayo Clinic, AHA ও CDC-এর গবেষণা অনুযায়ী, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন, ওজন নিয়ন্ত্রণ, মানসিক চাপ কমানো এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হৃদপিণ্ডকে শক্ত রাখে ও রক্তে কোলেস্টেরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
১. হৃদযন্ত্রের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস
- স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাট কমান, যা মূলত লাল মাংস, ভাজাপোড়া খাবার, প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাকস ও ফুল-ফ্যাট দুধজাত পণ্যতে থাকে। এগুলো এলডিএল বা “খারাপ কোলেস্টেরল” বাড়ায়।
- ফাইবারযুক্ত খাবার বাড়ান, যেমন ওটস, ডাল, পূর্ণ শস্য, আপেল, শাকসবজি ও ফল। এগুলো রক্ত থেকে কোলেস্টেরল শোষণ কমায়।
- ভালো ফ্যাট বেছে নিন, যেমন জলপাই তেল, বাদাম, অ্যাভোকাডো ও সামুদ্রিক মাছ (স্যালমন, টুনা)। এগুলো এইচডিএল বা “ভালো কোলেস্টেরল” বাড়ায়।
- অতিরিক্ত চিনি ও লবণ এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়ায়।
২. সক্রিয় থাকুন ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম যেমন দ্রুত হাঁটা, সাইক্লিং বা সাঁতার কাটা কোলেস্টেরলের ভারসাম্য রক্ষা করে।
- সপ্তাহে দুইবার স্ট্রেংথ ট্রেনিং বা পেশি শক্ত করার ব্যায়াম করুন, যা বিপাকক্রিয়া উন্নত করে।
- মাত্র ৫-১০ শতাংশ ওজন কমানো কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখে।
৩. ধূমপান ত্যাগ ও অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ
- ধূমপান ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) কমায় এবং রক্তনালির ক্ষতি করে। ধূমপান বন্ধ করলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত হয়।
- অল্পমাত্রায় অ্যালকোহল গ্রহণ কিছু ক্ষেত্রে এইচডিএল বাড়াতে পারে, কিন্তু অতিরিক্ত পানীয় ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়িয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
৪. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন
- দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ রক্তে কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ বাড়ায়।
- প্রতিদিন কিছু সময় ধ্যান, গভীর শ্বাস–প্রশ্বাস, হাঁটা বা যোগব্যায়াম করলে শরীর ও মন দুটোই সুস্থ থাকে।
৫. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন
- ২০ বছর বয়সের পর থেকে প্রত্যেকের প্রতি ৪–৬ বছরে একবার কোলেস্টেরল পরীক্ষা করা উচিত।
- যাদের পরিবারে হৃদরোগ বা ডায়াবেটিসের ইতিহাস আছে, তাদের বছরে একবার পরীক্ষা করাই উত্তম।
- নিয়মিত পর্যবেক্ষণ সমস্যা আগেভাগে শনাক্ত করতে ও জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে।
উচ্চ কোলেস্টেরল মানেই হৃদরোগ নয়, যদি সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
সুষম খাদ্যাভ্যাস নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ধূমপান পরিহার ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এই অভ্যাসগুলোই প্রাকৃতিকভাবে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
Mayo Clinic, AHA ও CDC-এর তথ্য অনুযায়ী, এসব পদক্ষেপ হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখে।





